সোমবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:১৫ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

প্রাপ্তি এবং সম্ভাবনার সমীকরণ

ড. দেলোয়ার হোসেন:

ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য এবং নৃতাত্ত্বিক বৈচিত্র্য এই দুইয়ে অনন্য বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকা। প্রায় ১৩ হাজার ১৮৪ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই এলাকার সঙ্গে সীমান্ত রয়েছে মিয়ানমার এবং ভারতের দুই রাজ্য মিজোরাম এবং ত্রিপুরার। আয়তনে পুরো বাংলাদেশের প্রায় দশ ভাগের এক ভাগ হলেও পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের তিন জেলার মোট জনসংখ্যা এখনো ১৬ লাখ পেরোয়নি। মিয়ানমারের চীন ও রাখাইন এবং ভারতের সংঘাতপূর্ণ উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর সঙ্গে ভৌগোলিক সান্নিধ্য, চলমান রোহিঙ্গা সংকট, দীর্ঘকাল ধরে চলে আসা সশস্ত্র সংগ্রাম এবং বঙ্গোপসাগরকে কেন্দ্র করে ভূরাজনৈতিক নানা সমীকরণের কারণে বিশ্বের সবচেয়ে নাজুক ও অস্থিতিশীল উপ-অঞ্চলগুলোর তালিকায় নির্দ্বিধায় চলে আসে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের নাম। ব্রিটিশ ভারত থেকে পূর্ব পাকিস্তান এবং পূর্ব পাকিস্তান থেকে স্বাধীন বাংলাদেশ-কালের পরিক্রমায় পার্বত্য চট্টগ্রামের রাজনৈতিক পরিচয় একাধিকবার পরিবর্তন হলেও জাতিগত বৈশিষ্ট্য, সাংস্কৃতিক প্রশ্ন, পাহাড়ি-বাঙালি দ্বন্দ্ব এবং অন্যান্য ইস্যুকে কেন্দ্র করে সংঘাত এবং সংবেদনশীলতা কমেনি কোনো কালেই। বিশেষত গত সত্তরের দশকের শেষভাগ থেকে নৃতাত্ত্বিক, ভাষাগত এবং সাংস্কৃতিক পরিচিতির স্বীকৃতির সূত্র ধরে সশস্ত্র সংগ্রামের সূচনা হয়; রক্তক্ষয়ী যে সংগ্রাম চলে পরবর্তী ২৫ বছর পর্যন্ত। দীর্ঘ শান্তি আলোচনা শেষে ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি এবং তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি’ স্বাক্ষরিত হয়। ১৯৭২ সাল থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত প্রায় ২৫ বছর ধরে বাংলাদেশ সরকার এবং জনসংহতি সমিতির সশস্ত্র দল ‘শান্তি বাহিনী’র মধ্যকার সশস্ত্র সংঘাতের ইতি টানে ঐতিহাসিক এই চুক্তি।

শান্তি প্রতিষ্ঠায় যুগান্তকারী পদক্ষেপ

পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে শান্তি এবং উন্নয়ন দুই ক্ষেত্রেই বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে ১৯৯৭ সালের এই শান্তিচুক্তি। বেশ কিছু কারণে এই চুক্তিকে তৎকালীন শেখ হাসিনার সরকারের এক ঐতিহাসিক অর্জন হিসেবে অভিহিত করা যায়। প্রথমত, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের প্রায় ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ সরকার। ক্ষমতা গ্রহণের মাত্র ১৮ মাসের মাথাতেই বিশ্বের সবচেয়ে পুরনো এবং সবচেয়ে জটিল এই জাতিগত সমস্যার সূত্র আবিষ্কারে সক্ষম হন শেখ হাসিনা। পার্বত্য চট্টগ্রামে স্থায়ী শান্তি এবং উন্নয়নের নিশ্চিতকরণের বিষয়টি আওয়ামী লীগের রাজনীতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। ২০০৮ সালে নির্বাচনকে সামনে রেখে দলটির রাজনৈতিক ইশতেহারেও বিশদভাবে উঠে আসে পার্বত্য চট্টগ্রাম প্রসঙ্গ। দ্বিতীয়ত, এই শান্তিচুক্তি ছিল শেখ হাসিনার সরকার এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির মধ্যে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার ফল। কোনো ধরনের মধ্যস্থতাকারীর সাহায্য ছাড়াই অত্যন্ত সংবেদনশীল জাতিগত ইস্যুর গ্রহণযোগ্য সমাধানে পৌঁছানোর ঘটনা এক দুর্লভ কৃতিত্বের দাবিদার। তৃতীয়ত, সাংবিধানিকভাবে বাংলাদেশ এককেন্দ্রিক রাষ্ট্র (ঁহরঃধৎু ংঃধঃব) হওয়া সত্ত্বেও ওই অঞ্চলের শান্তি ও উন্নয়নের স্বার্থে এক ঐতিহাসিক সমঝোতার নিদর্শন পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি। পঞ্চমত, পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় শান্তি এবং সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার যে প্রচেষ্টা, তাতে ওই অঞ্চলের অধিবাসীদের অকুণ্ঠ সমর্থন আদায়েও সফল সরকার। এ ছাড়া এই অঞ্চলের উন্নয়ন ত্বরান্বিতকরণ এবং অধিবাসীদের মধ্যে টেকসই আস্থা নির্মাণে স্থানীয়, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক বেশ কিছু অরাষ্ট্রীয় কর্মক বা নন-স্টেট অ্যাক্টরসমূহের অংশগ্রহণের সুযোগও তৈরি হয় এই চুক্তির মধ্য দিয়ে।

কী আছে এই চুক্তিতে?

বিশ্বের খুব অল্পসংখ্যক শান্তিচুক্তির পরিসর আমাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তির মতো এতখানি ব্যাপক এবং প্রগতিশীল। একটি প্রস্তাবনা, চারটি ভাগ এবং মোট ৭২টি ধারার এই চুক্তিতে উঠে এসেছে পার্বত্য এলাকার বাসিন্দাদের জীবন ও জীবিকার প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্র, যেমন : ভূমি, মানবাধিকার, লৈঙ্গিক ইস্যু, দ্বন্দ্ব-সংঘাত, এবং সংঘাত-পরবর্তী শান্তি প্রতিষ্ঠা ও উন্নয়ন নিশ্চিতকরণসহ বিভিন্ন ইস্যু। চুক্তির প্রস্তাবনায় বলা আছে, ‘বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের আওতায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতার প্রতি পূর্ণ ও অবিচল আনুগত্য রাখিয়া পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে সকল নাগরিকের রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, শিক্ষা ও অর্থনৈতিক অধিকার সমুন্নত এবং আর্থসামাজিক উন্নয়ন প্রক্রিয়া তরান্বি^ত করা এবং বাংলাদেশের সকল নাগরিকের স্ব-স্ব অধিকার সংরক্ষণ ও উন্নয়নের’ লক্ষ্যেই চুক্তি।

শান্তিচুক্তির যত অর্জন

পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য এবং প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়ে এক বিশেষায়িত শাসন কাঠামো গড়ে তোলার পথ সুগম করে ১৯৯৭ সালের এই শান্তিচুক্তি। স্বায়ত্তশাসনের দাবির সঙ্গে সংগতি রেখে এই অঞ্চলকে ‘উপজাতি অধ্যুষিত অঞ্চল’-এর স্বীকৃতি দেওয়া হয় এবং এই অঞ্চলের ‘বৈশিষ্ট্য সংরক্ষণ’ এবং ‘সার্বিক উন্নয়ন অর্জন করার প্রয়োজনীয়তা’ স্বীকার করে নিয়ে আলাদা তিন স্তরের একটি অনন্য প্রশাসনিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়। প্রথমত, এই চুক্তির মধ্য দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয় যাত্রা শুরু করে, যার মন্ত্রী জাতিগতভাবে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপজাতিভুক্ত হবেন। মন্ত্রী এবং উপজাতি ও অ-উপজাতি বাসিন্দাদের প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত কমিটি মন্ত্রণালয়টি পরিচালনা করে থাকে। দ্বিতীয়ত, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি এবং বান্দরবান এই তিন পার্বত্য জেলার কাউন্সিল বা পরিষদগুলোর তদারকি এবং সমন্বয়ের স্বার্থে গঠন করা হয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ। ২২ সদস্যের এই আঞ্চলিক পরিষদের প্রধান নির্বাচিত হন তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্যের ভোটে। তৃতীয়ত, পার্বত্য জেলা পরিষদগুলোর ক্ষমতা এবং দায়িত্বের পরিসরও বহুগুণে বৃদ্ধি করা হয়েছে। জেলা পরিষদগুলোর দায়িত্ব এবং কর্র্তৃত্বের আওতায় আছে ভূমি ব্যবস্থাপনা, স্থানীয় পুলিশ, উপজাতি আইন ও সামাজিক ন্যায়বিচার, যুব উন্নয়ন, পরিবেশ রক্ষা, উন্নয়নমূলক কার্যক্রম, পর্যটনশিল্পের প্রসার এবং জেলার আওতাধীন স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর সার্বিক তত্ত্বাবধান ইত্যাদি। পার্বত্য জেলাগুলোর হেডম্যান, সার্ভেয়ার এবং সহকারী কমিশনারসহ (ভূমি) কর্মকর্তাদের কাজকর্মের তদারকির ক্ষমতাও এই জেলা পরিষদগুলোর হাতে। মূলত পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং আঞ্চলিক পরিষদের প্রতিষ্ঠা এবং তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের ক্ষমতা ও দায়িত্ব সংহতকরণের মধ্য দিয়েই এগিয়ে চলেছে ১৯৯৭ সালের এই ঐতিহাসিক চুক্তির বাস্তবায়নের কাজ। ২০১৬ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদের অধিবেশনে এক তারকাচিহ্নিত প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, শান্তিচুক্তির ৭২টি ধারার মধ্যে ৪৮টি এরই মধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে এবং বাকি ধারাগুলোর বাস্তবায়নেও সরকার কাজ করছে। সরকারি অন্যান্য সূত্র মতে, ১৫টি ধারার বাস্তবায়ন আংশিক পর্যায়ে রয়েছে এবং ৯টির বাস্তবায়নের কাজ চলমান। প্রথমত, শান্তিচুক্তির বাস্তবায়নই যে পার্বত্য চট্টগ্রামে টেকসই শান্তির একমাত্র পথ, সে বিষয়ে কোনো বিতর্ক নেই। দ্বিতীয়ত, এই শান্তিচুক্তির মাধ্যমে প্রায় ২৫ বছর ধরে চলা এক সশস্ত্র সংগ্রামের অবসান হয়েছে। সহিংসতা এবং রক্তক্ষয়ের পথে হেঁটে কোনো পক্ষই জিততে পারে না, এই চুক্তির মাধ্যমে সে সত্যই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। নাজুক ও বৈচিত্র্যপূর্ণ এই অঞ্চলে শান্তিচুক্তিটি তাই নিঃসন্দেহে এক সাহসী পদক্ষেপ। তৃতীয়ত, শান্তিচুক্তির মাধ্যমে এই অঞ্চলে বহিঃশক্তির হস্তক্ষেপ এবং কলকাঠি নাড়ানোর সুযোগ কমে যাওয়ার ফলে ভূরাজনৈতিক বিবেচনাতেও লাভবান হয়েছে বাংলাদেশ। চতুর্থত, শান্তিচুক্তির মাধ্যমে প্রশাসনিক যে কাঠামোর সূচনা হয়েছে, সেটি অত্র অঞ্চলে বিভিন্ন নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীর মধ্যে শান্তি, উন্নয়ন ও সম্প্রীতি নিশ্চিতকরণে সুদূরপ্রসারী ভূমিকা রাখবে।

চ্যালেঞ্জসমূহ

পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন গোষ্ঠী থেকে শুরু করে সরকারি সংস্থা ও শান্তি প্রক্রিয়ায় জড়িত সব অংশীজন বা স্টেকহোল্ডারকেই সহযোগিতাপূর্ণ মনোভাব নিয়ে একত্রে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে এগিয়ে আসতে হবে। প্রথমত, ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা এখানকার সহিংসতাকে উসকে দেওয়ার পাশাপাশি আন্তঃসাম্প্রদায়িক এবং আন্তঃধর্মীয় সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করার সম্ভাবনা সৃষ্টি করে। দ্বিতীয়ত, সাম্প্রতিক সময়ে এই অঞ্চলে চাঁদাবাজি, অপহরণসহ পাহাড়ি সম্প্রদায়গুলোর নিজেদের ভেতরে সংঘাত বেড়েই চলেছে। তৃতীয়ত, একদিকে প্রতিটি সম্প্রদায় নিজস্ব সদস্যদের ভেতরে যেমন বিরোধ রয়েছে এবং তেমনি আন্তঃসম্প্রদায় পর্যায়েও আস্থা ও বিশ্বাসের যথেষ্ট অভাব রয়েছে। চতুর্থত, সোশ্যাল মিডিয়ার এই যুগে গুজব ও ভুল তথ্য প্রচারের ফলে সমাজে বহুমুখী সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। এসব অপপ্রচারের ফলে বাঙালিদের সঙ্গে পাহাড়ি জনগণের বৈরী সম্পর্কের সৃষ্টি হয়।

ভবিষ্যতে অপার সম্ভাবনা

শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের পর ২৫ বছর পেরিয়ে গেলেও চুক্তি বাস্তবায়নের অঙ্গীকারে এখনো অবিচল শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার। পার্বত্য জনগণের জীবন ও জীবিকার মানোন্নয়নে সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছার প্রতিফলন এই চুক্তি। এখন অনুন্নত দেশের তকমা ঝেড়ে ফেলে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে প্রবেশের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ। এ সময় পার্বত্য চট্টগ্রামের জন্য একটি শান্তিপূর্ণ ভবিষ্যৎ নির্ধারণে কয়েকটি বিষয় অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। প্রথমত, এটা মাথায় রাখতে হবে যে, শান্তিচুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন ছাড়া শান্তিপূর্ণ পার্বত্য চট্টগ্রাম প্রতিষ্ঠার আর কোনো বিকল্প নেই। কারণ, স্থানীয় অধিবাসীদের বিশ্বাস পাহাড়ে সব সমস্যা সমাধানের মূল চাবিকাঠি হলো এই চুক্তির বাস্তবায়ন। দ্বিতীয়ত, এখন পর্যন্ত এই ইস্যুতে অর্জিত অগ্রগতিগুলোকে চিহ্নিতকরণ এবং সামগ্রিকভাবে উপস্থাপনের প্রয়োজন রয়েছে। তৃতীয়ত, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি এই অঞ্চলে মীমাংসা ও ঐক্যের ভিত্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। তাই চুক্তির মূলনীতিগুলো বাস্তবায়ন করা হলে তা এক অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে। চতুর্থত, বাঙালি ও স্থানীয়দের মধ্যে পারস্পরিক আস্থার বিকাশ এবং অসাম্প্রদায়িক ও প্রগতিশীল দৃষ্টিভঙ্গির স্ফুরণে আরও উদ্যোগী হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। পঞ্চমত, এই অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে ‘ভূমি ব্যবস্থাপনা’ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ইস্যু। শান্তিপূর্ণ পার্বত্য চট্টগ্রাম প্রতিষ্ঠায় সব ধরনের ভূমিবিরোধ নিষ্পন্ন করা দরকার। ষষ্ঠত, কর্মসংস্থান, সরকারি, বেসরকারি এবং সামাজিক বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার ক্ষেত্রে পাহাড়ি-বাঙালি বৈষম্য দূর করতে হবে।

লেখক : অধ্যাপক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION